আদিল হোসেন তপু,ভোলা নিউজ২৪ডটনেট।।ভোলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সম্মাননা প্রদান, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (২৪) জুন সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম ছিদ্দিক।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মাহামুদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মৃধা মো: মোজাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আতহার মিয়া. ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো: কামাল হোসেন প্রমুখ।
পরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিভিন্ন গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পেিরবশনা হয়। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন লেডিস কাবের সাধারন সম্পাদক খাদিজা আক্তার স্বপ্না।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, রবীন্দ্রনাথ জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। তাঁর লেখনীতে ফুটে উঠেছে মানবতার জয়গান। মানুষকে নিয়ে তিনি আরাধনা করতেন। তাঁর লেখায় শৈশব, কৈশোর, তারুণ্যের উচ্ছলতা খুঁজে পাওয়া যায়। ধর্ম নিয়ে তিনি বাড়াবাড়ি করতেন না। মানবধর্মকেই তিনি ভালোবাসতেন। বাংলার ষড়ঋতুকে ভালোবেসে তিনি লিখেছেন গদ্য ও পদ্য। তাই তো পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরও তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী। বক্তারা আরও বলেন, মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না, বিদ্রোহ, বিক্ষোভসহ যত ধরনের অনুভূতি থাকতে পারে তার সবগুলো ক্ষেত্রেই অসাধারণ নৈপুণ্যে অবাধে বিচরণ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতে যে কয়েকজন মানুষকে মহীরুহ হিসেবে বর্ণনা করা যায় তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম হিসেবে গণ্য হবেন। অসীম প্রতিভার অধিকারী এই মহামানব বাংলা সাহিত্যকে সম্পূর্ণ নতুন একটি মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্বের দাবিদার।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম কবি হিসেবে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ছিল বটে। কিন্তু বাঙালি সব থেকে বেশি ভালোবেসেছে নজরুলের গান। কাজী নজরুল ইসলামও দুই হাত ভরে গান লিখেছেন। বিচিত্র সব বিষয় ও সুর ছিল সেসব গানের। গান লিখতে সময়ও লাগত কম। সামনে হারমোনিয়াম ও পানের বাটা থাকলেই হতো। চট করে একটি গান তৈরি হয়ে যেত তাঁর হাতে। বক্তারা বলেন, শুধু ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি লেখার কারণে নজরুলকে বিদ্রোহী বলা হয়, তা নয়। তাঁর মূল বিদ্রোহ ছিল অসাম্য, অন্যায়, কুসংস্কার ও জাতিভেদের বিরুদ্ধে। মানুষের সামাজিক চেতনায়ও তিনি আঘাত করেছেন। মাত্র ২০ বছরের সাহিত্যিকজীবনে তিনি দুই হাতে লিখেছেন। লেখনীর যে ধারায় হাত দিয়েছেন, অনিন্দ্য সুন্দর ফুল ফুটিয়েছেন।
এসময় বক্তারা নতুন প্রজন্মকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন অনুস্মরণ করে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠান শেষে উচ্চাঙ্গ ও লোকনৃত্য জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত হওয়ায় জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে নৃত্য শিল্পী ইসরাত জাহান হৃদিকা সম্মাননা জানানো হয়। এসময় জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম ছিদ্দিক হৃদিকার হাতে ক্রেস্ট ও নগদ ১০হাজার টাকা সম্মানী প্রদান করেন।