ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় দুই কিশোরকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানোয় পরীক্ষার্থী দুই কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজী টুলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার চরযশোহরদী ইউনিয়নের চাঁদহাট গ্রামে অবস্থিত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ওই দুই কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা হলেন- পাশের গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা কাজল শেখ (৪৫) ও দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম ওরফে আমির (৪৪)।
কাউন্সিলর কাজল শেখ এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে নানা ধরনের অনিয়ম হচ্ছে- এমন খবর শুনে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষ থেকে শিক্ষকরা বই নিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং কয়েকজন পরীক্ষার্থী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় আনুমানিক ১৬/১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরকে পরীক্ষা হল থেকে বের হয়ে আসতে দেখা যায়।
নগরকান্দা ইউএনও জানায়, ওই দুই কিশোরকে চ্যালেঞ্জ করলে জানায়, তারা নিজেরা পরীক্ষার্থী নয়। তারা একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। তারা দুজন মুকসুদপুর পৌরসভার এক নম্বর ও দুই নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলরের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল।
ইউএনও ইমাম রাজী টুলু আরও বলেন, প্রক্সি দেওয়ানোর ফলে পরীক্ষার্থী ওই দুই কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় প্রক্সি দেওয়া ওই দুই কিশোরের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া কেন্দ্র সচিবের কাছে ওই কেন্দ্রের তিন শিক্ষককে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
তবে মুকসুদপুর পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শরিফুল ইসলাম দাবি করে বলেন, তিনি কাউকে দিয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দেননি। তিনি নিজেই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
বহিষ্কারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজল শেখ (৪৫) বলেন, দেখে লেখার জন্য তাদের দুই কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের হয়ে কেউ প্রক্সি পরীক্ষা দিচ্ছিল না। তিনি দাবি করে বলেন, আমরা নিজেরাই পরীক্ষা দিচ্ছিলাম।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই কেন্দ্রের সচিব সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবতাব মণ্ডল বলেন, ইউএনও শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে তার প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে দুই কাউন্সিলর পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছেন। এছাড়া ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের তিন শিক্ষককে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছেন।