সারাদেশে ১শ ১৫ এলাকায় নির্বাচন আজ

0
414
রাত পোহালেই ভোট vote,rtv,rtvonline

ভোলা নিউজ ২৪ডটনেট : আজ স্থানীয় সরকারের পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা পরিষদের ১শ ১৫ এলাকায় বিভিন্ন পদে সাধারণ, স্থগিত নির্বাচন ও উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। জেলা পরিষদে সকাল নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত ভোট দেবেন জনপ্রতিনিধিরা।

তবে স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচনেও সহিংসতা, প্রভাব বিস্তার ও ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানোর বিস্তর অভিযোগ এসেছে ইসিতে। এসব অভিযোগের বেশিরভাগই সংসদ সদস্য, পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীদের বেশিরভাগই বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের বেশ কিছু সত্যতাও পেয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। আর এসব ঘটনায় হার্ডলাইনে রয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।এরই অংশ হিসেবে বুধবার ভোটের একদিন আগে পক্ষপাতের অভিযোগে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসিকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয়ভাবে পদক্ষেপ নিতে ডিসি, এসপি, ইউএনও ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোথাও সহিংসতা হলে ভোটগ্রহণ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।ইসি কর্মকর্তারা জানান, গত রোববার শরীয়তপুরের সরকারি দলের একজন এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে ইসি। জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আমিন হাওলাদার এ অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মো. মোশারফ হোসেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভাংচুর, বোমাবাজি, ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ করেছেন।ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ইকু ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম মিন্টু স্বাক্ষরিত এক অভিযোগে ইসিকে জানিয়েছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্লিনার জাবেদ মোল্লা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলামের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এ দুই নেতা।

এছাড়া ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ৫নং আমিনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম আখতার উদ্দিন মঈন ইসিতে দায়ের করা এক অভিযোগে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন ও ভোটগ্রহণের সময়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন।এসব অভিযোগের বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বুধবার জানান, আমরা অনেক অভিযোগ পেয়েছি। এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও ও আমাদের কর্মকর্তাদের (ইসি) বলা হয়েছে। কুমিল্লার একজন ওসিকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে কমিশন নির্দেশনা দিয়েছেন।সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, ভালোভাবে ভোটগ্রহণ করতে পারবো। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারবেন সেই ব্যবস্থা নিতে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যোগ করেন তিনি।ইসির কর্মকর্তারা জানান, যে ৩৭টি ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নির্বাচন হবে সেগুলোর মধ্যে ১৫টিই কুমিল্লায় অবস্থিত। এছাড়া সেখানে ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনও রয়েছে। এসব নির্বাচনে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। সেখানকার ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়ে কমিশনকে অবহিত করেন। পরে কমিশন তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন নির্বাচন থেকে এ পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল বলেও জানান তারা। ভোটগ্রহণের আগের দিন বুধবার ইসির যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই ওসিকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশনা কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ৯টি পৌরসভা (পঞ্চগড়ের বোদা, নাটোরের বনপাড়া, ফরিদপুরের আলফাডাংগা, জামালপুরের বকশিগঞ্জ, রাজশাহীর বাঘা ও দিনাজপুরের বিরল ৬টি পৌরসভায় সাধারণ এবং শেরপুরের শেরপুর, নরসিংদীর মাধবদী ও চুয়াডাঙ্গার চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার একটি করে সাধারণ ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন); ইউপির ১১৫টি (৩৭টি সাধারণ-স্থগিত নির্বাচন, ৭৮টি উপ-নির্বাচন), জেলা পরিষদের ২টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও ১টি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট রয়েছে। নির্বাচন সামগ্রী কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মাঠে তৎপর রয়েছে। ৬টি পৌরসভার সাধারণ নির্বাচনে ৬টি মেয়র পদের জন্য ২৬ জন, সংরক্ষিত ১৯টি ওয়ার্ডের জন্য ১১২ এবং ৫৭টি কাউন্সিলর পদের জন্য ৩০১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৬১টি ভোট কেন্দ্রের জন্য এ নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৯ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি মোবাইল ফোর্স ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। ইসি কর্মকর্তারা আরো জানান, এছাড়া ইউনিয়নে প্রতি ভোটকেন্দ্রে ২০ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। কোথাও কোথাও কোস্টগার্ডও রয়েছে। প্রতিটি এলাকায় আচরণবিধি প্রতিপালনে মোবাইল কোর্ট কাজ করছে।

LEAVE A REPLY