লঞ্চে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বন্ধ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

0
5

ডেক্স নিউজ ভোলা নিউজ ২৪ ডট কম

জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এবং এফসিটিসি’র সাথে সামঞ্জস্য করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে সংশোধনের অঙ্গীকার করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রতি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) এবং লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ফোরাম যৌথভাবে “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে নীতি- নির্ধারকদের কাছে প্রত্যাশা” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা আয়োজন করে।

সিরডাপ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ্ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো: হেলাল উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব, (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, জনাব হোসেন আলী খোন্দকার, সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব), জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব মো: আজহার আলী তালুকদার, অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) ও চেয়ারম্যান, ডরপ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি জনাব সুশান্ত সিনহা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে প্রস্তাবসমূহ উপস্থাপন করেন, ডরপ এর পরিচালক যোবায়ের হাসান। উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিক, সুশীল সমাজের সদস্য, বিড়ি শ্রমিক ও নেতা, ডরপ মা সংসদের সদস্য, যুব ফোরামের সদস্যবৃন্দ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে ৬টি সংশোধনী প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নেন।

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬টি দুর্বলতা সমূহ চিহ্নিত করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার প্রস্তাব সমূহ যেমন- সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা কৌটায় নূন্যতম পরিমাণ নির্ধারণসহ মোড়কীকরণে কঠোর নিয়ম আরোপ করা তথা প্লেইন প্যাকেজিং বাস্তবায়ন করা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ্ চৌধুরী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ বাস্তবায়ন আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। উপস্থাপিত ৬টি সংশোধনী প্রস্তাব খুবই সময়োপযোগী। আমি মনে করি সরকারের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় এই সংশোধনী প্রস্তাব এর পক্ষে সমর্থন দেবেন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনে ভূমিকা রাখবেন। আমি আমার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে লঞ্চে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বন্ধ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

জনাব হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ আলোচনা সভায় প্রস্তাবিত ৬টি দাবির সাথে একমত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন যে খসড়া তৈরি হয়েছে তাতে ডরপ এর দাবির সবগুলো বিষয়ই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটি সফল হয়েছে সম্মিলিত তামাক বিরোধী ক্যাম্পেইনের কারণে।”

জনাব মো: হেলাল উদ্দিন বলেন, “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রতি সরকার খুবই আন্তরিক। বিদ্যমান আইন শক্তিশালীকরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আমাদের শক্তির জায়গা। আলোচনা সভায় যুব সমাজের সদস্য এবং সুশীল সমাজের সদস্যরা খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধসহ আরো যে ৫টি দাবি কথা বলেছেন তা অত্যন্ত যৌক্তিক। এ বিষয়টি আইনে অন্তর্ভুক্ত হলে আমরা একটা শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাবো।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)এর সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মোঃ আতাউর রহমান বলেন, বিদ্যমান আইনের বেশ কিছু ফাঁক-ফোকরের কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন বড় বাঁধার সম্মুখিন হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় এবং সংসদ সদস্যবৃন্দকে সংসদে এই বিষয়গুলো উত্থাপন করতে অনুরোধ জানাবো।

অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত ৬টি সংশোধনীর প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে উপস্থিত যুব সদস্য, বিড়ি শ্রমিক, সুশীল সমাজের সদস্য, সাংবাদিকগণ সংসদ সদস্য ও নীতি-নির্ধারককে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান।

LEAVE A REPLY