দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: সংসদে ক্ষমা চাইলেন ইনু

0
0

ভোলা নিউজ২৪ডটকম।।দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য নিজের ও সরকারের পক্ষে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা হাসানুল হক ইনু।

সংসদে দেওয়া বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি বলেন, আমরা জানি মানুষ কষ্টে আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সংকটের জন্য এই কষ্ট হঠাৎ শুরু হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য আমি আমার ও সরকারের তরফ থেকে জনগণের কাছে মাফ চাচ্ছি। আমি আপনাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনা সাধারণ প্রস্তাবের আলোচনায় ইনু ক্ষমা চান। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সাম্প্রতিক সমস্যায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জাতিকে জানাতে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

সরকারের মন্ত্রীদের অতিকথনের সমালোচনা করে হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা প্রকাশ করছেন। ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। সেখানে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য দুঃখ-কষ্ট নিয়ে সমবেদনার বদলে ঠাট্টা-মশকরা করছেন। এটা মর্মান্তিক ও দুর্ভাগ্যজনক। আমি এর নিন্দা জানাই। যারা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তারা দায়িত্ব ছেড়ে দেন। মানুষকে বাঁচান, প্রধানমন্ত্রীকেও বাঁচান।

চা-শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই ঘটনা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। এতদিন ধরে তারা অনশন-ধর্মঘট করছেন। কোনো মন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথা বললেন না। আমার মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে অনেকেই অন্ধকারে রাখেন। পরিস্থিতি জটিল হলে তখন ওনাকে (প্রধানমন্ত্রী) হস্তক্ষেপ করতে হয়। তিনি হস্তক্ষেপ করে সমাধান করেন।

জাসদ সভাপতি বলেন, আড়তদার, উৎপাদক, খুচরা বিক্রেতা- একেকজন একেক কথা বলে দোষারোপ করছেন। ডিমের ক্ষেত্রে তো দেখলাম ভোক্তা অধিকারের হস্তক্ষেপে দাম কমে এলো। তাহলে চালের বাজার কেন নামবে না? এর অর্থ ব্যাপারটা আমাদের হাতেই আছে।

বাজেটের ভেতরে থেকে কিছু অদল-বদল করে ৬ মাসের জন্য বিশেষ প্যাকেজ প্রস্তাব বাস্তবায়নের কথা বলেন ইনু। তিনি গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নগদ ও পণ্য সহায়তা, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু, খোলাবাজারে বিক্রির আনুষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, কুইক রেন্টালের মালিকদের পরিবর্তে গরিব গ্রাহকদের ভর্তুকি দেওয়া, বিলাস দ্রব্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা, রেমিট্যান্সে প্রণোদনা ৩ শতাংশে বৃদ্ধি করা, সামাজিক নিরাপত্তায় খানাভিত্তিক তালিকা প্রণয়ন, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করা, রাজস্ব আদায় বাড়ানো, ডলার ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি তেলের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার এবং নিত্য ও খাদ্যপণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি চোখেও দেখে না, কানেও শোনে না। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তাদের কানে তুলো-ছোখে ঢুলি ছিল। তারা জনগণের কষ্ট বোঝেনি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চোখে দেখেন-কানে শোনেন। তিনি অতীতের সংকট মোকাবিলা করেছেন। সাময়িক সংকট মোকাবিলার ক্ষমতা আমাদের সরকারের আছে, প্রধানমন্ত্রীর আছে।

প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের অনুরোধ করে ইনু বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা সংকটকাল পুঁজি করে মানুষের পকেট কাটবে। আর ঘোলা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে অস্বাভাবিক সরকার গঠন করার চক্রান্ত করবে বিএনপি ও তার দোসররা।

তিনি বলেন, এই প্রস্তাব অসাধু কারসাজিদের সিন্ডিকেট ধ্বংস করে দেবে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে যারা ঘোলাজলে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে, সংবিধান বানচাল ও নির্বাচন বানচালর স্বপ্ন দেখছে, তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।

LEAVE A REPLY