রাম রহিমের ডেরায় মিলল বিপুল পরিমাণ কনডম!

0
457

ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ভারতের কথিত ধর্মগুরু রাম রহিমের ডেরায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ কনডম ও জন্মনিরোধক ওষুধ জব্দ করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)।

হাফিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মামলার প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা এম নারায়ণ একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এম নারায়ণ বলেন, ‘তাঁর (রাম রহিম) কক্ষে বিপুল পরিমাণ কনডম ও জন্মনিরোধক বড়ি মজুত করা ছিল। তিনি একজন উন্মাদ। বন্য পশুর মতো।’

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রায় ঘোষণার সময় আদালতে গুরমিত রাম রহিম নিজেকে নপুংসক বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে আমি শারীরিকভাবে অক্ষম, নপুংসক। আমার পক্ষে কাউকে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়।’ এ সময় আদালত বলেন, আপনি মিথ্যে বলছেন, কারণ আপনার সন্তান আছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা এম নারায়ণ ও তাঁর তদন্তদলকে রাম রহিমের সমর্থকেরা হুমকি দিচ্ছেন। এরপরই নারায়ণ সিরসার ডেরায় রাম রহিমের বিলাসী জীবনের বিস্তারিত বিবরণ দেন।

নারায়ণ বলেন, যৌন নির্যাতনের কারণে ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ২০০ নারী রাম রহিমের ডেরা ছেড়ে গিয়েছিলেন। তদন্ত সংস্থা সিবিআই তাঁদের মধ্যে মাত্র ১০ জনকে খুঁজে পেয়েছে। তাঁদের মধ্যেও মাত্র দুজন নারীকে দিয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করাতে পেরেছে।

মামলার এই প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ডেরার ভেতর রাম রহিম মধ্যযুগীয় রাজাদের মতো জীবনযাপন করতেন। তাঁর কক্ষ সব সময় নারীদের (সাধ্বী) দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকত। রোজ রাত ১০টার দিকে তিনি প্রধান সাধ্বীকে ফোন করে একজন অল্প বয়সী মেয়েকে তাঁর কক্ষে পাঠানোর জন্য বলতেন। ধর্ষণ মামলায় রায় হওয়ার পর ডেরা থেকে ১৮ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারাও ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না, তা জানতে ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাম রহিমের এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অনেকেই জানতেন। কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করায় তিনি অগণিত মানুষের প্রিয় হয়ে ওঠেন। দেশজুড়ে তাঁর লাখো অনুসারী তৈরি হয়। যা ছিল একটি বিশাল অঙ্কের ভোট ব্যাংক। এই ভোট ব্যাংককে কাজে লাগাতে অনেক রাজনীতিক ও সাংসদেরাও রাম রহিমের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মুখ বুজে থাকতেন।

নারায়ণ বলেন, তবে এ ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সব বাধা উপেক্ষা করে আইনের পথে চলতে তিনি সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

গত শুক্রবার দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় রাম রহিমকে। এরপর নেওয়া হয় রোহতক শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের সানোরিয়া কারাগারে। এতে রাম রহিমের সমর্থকেরা পঞ্চকুল এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩১ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হয়। পরে গত সোমবার রাম রহিমকে দুটি মামলায় ১০ বছর করে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন সিবিআই আদালত।

LEAVE A REPLY