বরিশালের লঞ্চযাত্রী হয়ে এক রাতের অভিজ্ঞতা

0
386

ভোলা নিউজ২৪ডটকম।।পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করা এখন অনেকটা ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মান ভিন্ন রূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে ,রাস্তাঘাটে জনসমাগম এড়িয়ে চলাই শ্রেয় এরই মাঝে যখন প্রয়োজনের তাগিদে দক্ষিনের এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে হয় তখন আমি নিজে সচেতন হলেই কি সম্ভব করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া?

আসলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যদি সচেতন ভাবে আমাদেরকে যাত্রী সেবা দিয়ে থাকে তাহলে এই সমস্ত ভাইরাস থেকে কিছু অংশ হলেও পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

ঢাকা সদরঘাট টার্মিনালে এসে পৌঁছলাম আগে থেকে লঞ্চের কোন বুকিং দেওয়া ছিল না তাই একটু হেঁটে দেখলাম কোন লঞ্চের যাত্রী হয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা দিব। অনেকগুলো লঞ্চের সামনে দিয়েই গেলাম তাদের থেকে এম ভি মানামীএকটু আলাদা চোখে পরলো লঞ্চের প্রবেশ মুখেই স্প্রে টানেল কিছুটা স্বস্তি পেলাম।

লঞ্চের সিঁড়ি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি হঠাৎ চোখে পড়ল থার্মাল থার্মোমিটারের মাধ্যমে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা একজন যাত্রীর স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে একটু বেশি হওয়ায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে যাত্রা থেকে বিরত রাখলেন। লঞ্চ থেকে নামিয়ে দিলেন, সেই যাত্রীর জন্য কিছুটা খারাপ লাগলে ও অন্য সব যাত্রীর জন্য এটা শুভকর এটা ভেবে ভালোই লাগলো।

দোতলা সিড়িতে উঠতে যাবো এই মুহূর্তে হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে।

প্রতিবার ভ্রমণের আগে সম্পুর্ণ ডেক এবং ফ্লোর জীবাণুনাশক স্প্রে করা হবে।এটা আসলেই অনেক ভালো উদ্যোগ আমার একটা সিঙ্গেল কেবিন দরকার ছিল কেরানিদের কাউন্টারগুলোর সামনে গিয়ে অনেকটা অবাক হলাম কাউন্টারগুলো এক্রাইলিক শিল্ড দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে।

আমাদের দেশে এগুলো ভাবা যায় যাই হোক নিজেকে অনেকটা সুরক্ষিত মনে হলো চাবি নিয়ে একজন কেবিন ক্রু স্টাফ আমার সাথে আসলেন কেবিনটি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তার হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক এবং ভাইজর/ফেইস শিল্ড পড়া ছিল এখানেও এসে নিজে সুরক্ষা নিয়ে আরেকটু আশ্বস্ত হলাম।

হঠাৎ আরেকজন কেবিন ক্রু জীবাণুনাশক স্প্রে নিয়ে আসলেন এবং আমাকে বললেন একটু বের হতে দরজার হ্যান্ডেল এবং রুম কী হোল্ডারগুলো মুছে দিয়ে গেলেন।

যাত্রীরা কেবিনে প্রবেশের আগে কেবিন ও প্যাসেঞ্জার ওয়াসরুমগুলো ডিসইনফেক্ট্যান্ট ফগ মেশিন ব্যবহার করে কেবিন জীবাণুমুক্তকরণ করা হল।

রুমে ঢুকতেই চোখে পরলো ওয়াশড করা কভারড বেডশিট, পিলো কভার এবং প্লাস্টিক র‍্যাপড পিলো সরবরাহ করা সম্পূর্ণ আলাদা প্যাক করা ছিল।

আসলেই এতোটুকু এক্সপেক্টেশন ছিলনা
যাইহোক এবার একটু বাইরে বের হওয়া যাক ,

সীমিত আকারে যাত্রী নেওয়ার ব্যাবস্থা।সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে পোল এবং কর্ডের মাধ্যমে পৃথক পৃথক ঘুমানোর স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

ডেকে ৬টি হাত ধোয়ার বেসিন সংযুক্ত করা হয়েছে ।

তৃতীয় তলার করিডোরগুলোতে সেন্সরযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজিং স্প্রে বুথ সংযুক্ত করা এতটা প্রযুক্তি সম্পন্ন আসলে আমি বাংলাদেশে আছি না বাইরের কোন কান্ট্রিতে আছি হঠাৎ ভাবার বিষয় হয়ে গেল।
খাবারের অর্ডার টা দিয়েছিলাম লঞ্চে উঠার পরেই কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরে হঠাৎ দরজায় নক খাবার নিয়ে আসলো, ক্লিং ফিল্ম দ্বারা কভার করে খাবার পরিবেশন এতটা আসলে আমি আশাই করিনি হঠাৎ টেনশনে পড়ে গেলাম এত ভাল সার্ভিস ভাড়া তো মনে হয় দুই গুণ হবে । কিছুক্ষণ পর কেবিনের টিকিট কাটার জন্য আসলেন টিকিট হাতে ধরিয়ে দিলেন ১০০০ টাকা আমার ভয়টা কিছুটা কেটে গেলো কারণ ডিসপোজেবল পেপার গ্লাস ওয়াইফাই এসি কেবিন এত এত সার্ভিস ভেবেছিলাম অনেক ভাড়া হবে সব মিলে যাত্রা টা অনেক ভাল ছিল ধন্যবাদ কর্তৃপক্ষকে। আরেকটা বিষয় এরকম কেউ যদি উদ্যোগ নিয়ে ভালো সার্ভিসের আশ্বাস দেয় তাহলে অন্যান্য লঞ্চের ব্যবসায়িক স্বার্থের বাইরে ও সার্ভিস নিয়ে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে আশা রাখছি ।

LEAVE A REPLY